১৮ কোটি মানুষের দেশে এ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা গড়ে মাত্র সাড়ে ৮ হাজার। যার প্রায় তিনের একভাগ সাধারণ যানের নিবন্ধনে চলাচল করে। প্রকৃত নিবন্ধিত এ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা ৬ হাজারের কিছু বেশী। এর ভিতরেই আছে সরকারী এ্যাম্বুলেন্স। যা দেশের স্বাস্থ্য সেবায় খুবই অপ্রতুল। এই বেশি অংশের জায়গা দখল আছে সল্প শিক্ষিত মানুষ। যারাই মূলত এ্যাম্বুলেন্সের স্বত্বাধিকারী। সরকারী এ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা হাতে গোনা হওয়ার সাধারণ মানুষের কাছে এই সেবা প্রাপ্তি খুবই দুষ্কর। ফলে অনেকটাই নির্ভর হতে বাধ্য হন বেসরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন এ্যাম্বুলেন্সের উপর। যেহেতু অর্থের বিনিময়ে এই সেবা হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আমরা প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্সের উপর নির্ভর হতেই পারি। তবে এই ব্যবস্থাপনার একটি অবকাঠামো অত্যন্ত জরুরি। তারমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য, সরকারিভাবে একটি নীতিমালা। নীতিমালায় সরকারী বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্সের যাবতীয় বিষয়গুলোর প্রাধান্য পাবে। এছাড়া একরুট থেকে অন্য রুটে যেতে ভাড়ার বিষয়টি নির্ধারিত থাকবে। যাতে রোগী তার যাতায়াতের বিষয়ে অন্য কোন দুশ্চিন্তায় যুক্ত না হয়। এ্যাম্বুলেন্স মালিক চালক সহযোগীদের সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ট্রেনিং, সেমিনারে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা। যাতে রোগী ও এ্যাম্বুলেন্স চলাচলে রোগীর প্রাথমিক সেবা ও যাতায়াতে আইনের সঠিক ব্যবহার করতে পারে। এ্যাম্বুলেন্স যেহেতু একমাত্র সেবাদানকারী বাহন সেহেতু সরকার চাইলে নির্ধারিত ট্যাক্স, ভ্যাট, নিবন্ধন ফি, বাৎসরিক চার্জ, সেতু বা ফেরীর চার্জ সাধারণ যানের মত না রেখে সহনীয় বা মুওকুফ করে দিতে পারে। ফলে উল্লিখিত প্রদেয় অর্থের সুবিধা রোগীর পক্ষে নেয়া বা দেয়া সম্ভব হবে। একটি সঠিক মনিটরিং ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি রাখা খুবই দরকার হবে। যেন সার্বিক বিষয়গুলো একটি নিয়মনীতি সাপেক্ষে পরিচালিত হয়। এমনকি একটি ডাটাবেইজ করা গেলে তা সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের কাজে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। দেশের জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলায় বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্সের ভূমিকা থাকে খুবই দৃষ্টান্তমূলক। এই প্রথা চালু রাখার জন্য সরকার ও সহযোগী সংগঠনগুলো এ্যাম্বুলেন্সের মালিক, চালক ও সহযোগীদের জাতীয় সম্মানে ভূষিত করার ভূমিকা রাখতে পারে। ফলে তাদের উৎসাহের যায়গা বৃদ্ধি পাবে। সেইসাথে সরকারী বেসরকারি প্রচার মাধ্যম সেগুলো প্রচার মুখি হলে এ্যাম্বুলেন্স ও সেবার যায়গা খুবই কাছাকাছি অবস্থানে চলে আসবে। জাতীয় স্বার্থে সরকারী বেসরকারি উন্নয়নমূলক সংস্থা বা সংগঠন (জিও এনজিও) স্বাস্থ্য সেবায় এ্যাম্বুলেন্সের ভূমিকা বিষয়ক প্রকল্প করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়গুলো নির্ধারন করে উন্নয়নমূলক কাজের ভূমিকা রাখতে পারে। সর্বশেষ এই পেশা ছেড়ে সল্প শিক্ষিত মানুষ যেন না যায় এবং শিক্ষিত মানুষ যেন আসতে পারে তাদের উৎসাহের ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার ব্যবস্থা করতে হবে। জাতীয় স্বার্থে উল্লিখিত বিষয়গুলো সময় নিয়ে হলেও বাস্তবায়ন করা উচিত। সেক্ষেত্রে জাতীয় জরুরি সেবার অন্তর্ভুক্ত এ্যাম্বুলেন্স সেবা তথা স্বাস্থ্য সেবায় একটি রাষ্ট্রের জনশক্তির মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখবে।